অনলাইন ডেস্ক, ১২ সেপ্টেম্বর।। পেরুর শাইনিং পাথ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতা ও প্রতিষ্ঠাতা অ্যাবিমায়েল গুজম্যান আর নেই। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। দর্শনশস্ত্রের সাবেক এই অধ্যাপক ১৯৯২ সাল থেকে সন্ত্রাসবাদ এবং রাষ্ট্রদ্রোহের জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করে আসছিলেন।গত জুলাই মাসে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় কারাগার থেকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছিল।
মাওবাদী এই গেরিলা গোষ্ঠী এবং পেরুর রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘর্ষে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ মারা গেছে বা নিখোঁজ হয়েছে।গুজমানের গ্রেপ্তার শাইনিং পাথ বিপ্লবী সংগঠনটিকে মারাত্মকভাবে আঘাত করেছিল, কিন্তু এর কয়েকজন সদস্য এখনও সক্রিয় আছেন।
অ্যাবিমায়েল গুজম্যান পেরুর দক্ষিণ উপকূলের মোলেন্দো শহরের কাছে ১৯৩৪ সালের ডিসেম্বরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এক ধনী বণিক বাবার ঘরে। গুজম্যানের মা মারা যাওয়ার পর সেই বাবাই তাকে বড় করেছিলেন।
ধনী পরিবারের সন্তান হওয়ায় প্রথম জীবনে এই বিপ্লবী নেতা বেশ স্বচ্ছল জীবন যাপন করেছেন। তিনি একটি প্রাইভেট ক্যাথলিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এবং পরে আরেকুইপা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন, যেখানে তার একটি গবেষণাপত্র ছিল জার্মান দার্শনিক ইম্মানুয়েল কান্টের ওপর।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি মার্ক্সবাদে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ১৯৬২ সালের মধ্যে তিনি কেন্দ্রীয় শহর আয়াকুচোর হুয়ামাঙ্গা ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সান ক্রিস্টাবল-এ দর্শনের অধ্যাপক হিসেবে স্থান অর্জন করেছিলেন।
১৯৬৫ সালে চীন ভ্রমণের সময় গুজম্যান কমিউনিস্ট নেতা মাও সেতুংকে দেখে বেশ অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন এবং পেরুতে ফিরে আসার পর তিনি আইয়াকুচো বিশ্ববিদ্যালয়ের সমমনা শিক্ষাবিদদের তার সঙ্গে যোগ দিতে উৎসাহিত করেছিলেন।
১৯৬৯ সালে তিনি এবং অন্য ১১ জন মিলে শাইনিং পাথ, স্পেনিশ ভাষায় সেন্ডেরো লুমিনোসো নামের একটি বিপ্লবী সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পেরুর কমিউনিস্ট জোসে কার্লোস মারিয়েতেগুইয়ের স্মরণে এই নামটি বেছে নেওয়া হয়েছিল, যিনি বলেছিলেন, ‘মার্কসবাদ-লেনিনবাদ হল ভবিষ্যতের উজ্জ্বল পথ’।