মুখ পুড়ল যোগী সরকারের, অক্সিজেনের অভাবে প্রাণ হারালেন ৭ করোনা রোগী

অনলাইন ডেস্ক, ২৮ এপ্রিল।। ফের মুখ পুড়ল যোগী সরকারের। রাজ্যে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন, ওষুধের ঘাটতি নেই বলে সাফাই দেওয়ার মাত্র চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে অক্সিজেনের অভাবে উত্তরপ্রদেশের মিরাটের পৃথক দুটি হাসপাতালে প্রাণ হারালেন ৭ জন করোনা সংক্রমিত রোগী। মঙ্গলবার এই ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসতে যোগীর সমালোচনায় মুখর রাজনৈতিক মহল। কেউ কেউ আবার করোনা রোগী নিয়ে তথ্য গোপন করার অভিযোগও তুলেছেন যোগীর বিরুদ্ধে।

জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার যোগীরাজ্য মিরাটের আনন্দ নামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাবে প্রাণ হারিয়েছেন ৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগী। অন্যদিকে একইদিনে রাজ্যের কেএমসি হাসপাতালে প্রাণ হারিয়েছেন ৪ জন রোগী। গোটা ঘটনায় হাসপাতালে প্রয়োজনের তুলনায় অক্সিজেনের অপ্রতুলতার অভিযোগ উঠেছে।

জানা গিয়েছে, দুটি হাসপাতালই রাজধানী দিল্লি থেকে মাত্র ২৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এদিন দুটি হাসপাতলে ভরতি থাকা গুরুতর অসুস্থ রোগীদের জন্য অক্সিজেন জোগার করতে বলা হয় বাড়ির লোককে। কিন্তু শতচেষ্টা করেও কোথাও অক্সিজেন পাননি মৃতের পরিবারের সদস্যরা। এই বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হয়েছে, অক্সিজেনের অভাবেই মারা গিয়েছেন তাঁরা। যদিও গোটা ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন আনন্দ হাসপাতালের মেডিকেল সুপারিন্টেন্ডেন্ট ডঃ সুভাষ যাদব।

এদিন সংবাদ মাধ্যমের কাছে তিনি বলেন, “হাসপাতাল গুলিতে এখনও পর্যাপ্ত অক্সিজেনের অভাব৷ আমাদের হাসপাতালে ভরতি করোনা রোগীদের জন্য প্রতিদিন অন্তত ৪০০ টি অক্সিজেন সিলিন্ডারের প্রয়োজন। সেখানে রয়েছে মাত্র ৯০ টি। আর সেগুলি সবই গুরুতর অসুস্থ রোগীদের দেওয়া হচ্ছে। ফলে দরকার পড়লেও অক্সিজেনের অভাবে ভুগতে হচ্ছে বাকিদের।” তিনি আরও বলেন, “গতকাল থেকেই আমাদের হাসপাতালে অক্সিজেনের ঘাটতি রয়েছে। বারবার চেয়েও মেলিনি পর্যাপ্ত অক্সিজেন।

এই অবস্থায় সোমবার যে তিনজন করোনা সংক্রমিত রোগী এখানে ভরতি হয়েছিলেন এদিন তাঁরা অক্সিজেনের অভাবে মারা গিয়েছেন।” অন্যদিকে অক্সিজেন নিয়ে প্রতিদিন একই সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কেএমসি হাসপাতালের প্রধান ডঃ সুনীল গুপ্তা। এদিন তিনি, “দেশের অন্যান্য রাজ্যের মতো এখানেও অক্সিজেনের খুব সমস্যা রয়েছে। প্রয়োজনের সময় চাহিদামতো অক্সিজেন না মেলায় প্রাণবায়ুর অভাবে প্রাণ হারাচ্ছেন অনেকেই।

“ গতকালও দুপুর ১২ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত হাসপাতালে কোনও অক্সিজেনের জোগান ছিল না বলে অভিযোগ করেন তিনি। শুধুমাত্র অক্সিজেনের অভাবে এই হাসপাতালেও একই ভাবে আরও ৪ জন করোনা সংক্রমিত রোগী মারা গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। একই অবস্থা মহম্মদ কাশিম, মনোজদের। করোনায় আক্রান্ত হয়ে বেশকিছু দিন ধরে হাসপাতালে ভরতি মহম্মদ কাশিমের মা। বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন অক্সিজেনের।

সেই অক্সিজেন জোগার করতে ছুটতে হচ্ছে মিরাট থেকে ১১০ কিমি দূরে অবস্থিত হরিয়ানার কার্নালে। সেখান থেকে ২৫,০০০ টাকা দিয়ে মায়ের জন্য অক্সিজেন কিনে এনেছে মহম্মদ। একই অবস্থা মনোজেরও। করোনায় আক্রান্ত হয়ে কেএমসি হাসপাতালে ভরতি রয়েছে ছোটোভাই। তাঁকে বাঁচাতে জরুরি অক্সিজেনের। কিন্তু হাসপাতালে অক্সিজেন না থাকায় অগত্য হরিয়ানার যমুনানগর থেকে একলাখ টাকায় তিনটি অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে এনেছেন তিনি।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?